শুক্রবার, ১২ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

চট্টগ্রামের রাউজান থেকে আজমানে গিয়ে আবাসন সম্রাট, অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জসিম উদ্দিনের পিতার নাম মোহাম্মদ ইউনুছ ও মাতার নাম আলমাস। তাঁদের নামে গড়ে তোলা হয়েছে ফাউন্ডেশনটি। তাঁরা প্রতিবছর প্রায় ১০ হাজার পরিবারের তিন মাসের খাবার খরচ দেন। শতাধিক পরিবারকে আধা পাকা ঘর নির্মাণ এবং অনেকের মেয়ের বিয়েতে খরচের জোগান দিয়েছেন। করোনাকালে নোয়াপাড়ার জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স কিনে দেয় জসিমের পরিবার।

রাউজানে জসিম উদ্দিনের সামাজিক কার্যক্রম সমন্বয় করেন ইয়াসিন আলী। তাঁকে প্রশ্ন করেছিলাম, জসিম উদ্দিনের এত টাকার উৎস কী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, উনি আগে দেশে সিএনজি পাম্পের ব্যবসা করেছেন। পরে আজমানে গিয়ে আবাসন খাতের ব্যবসা শুরু করেন। এখন বড় ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, ‘এলাকায় মসজিদ করেছেন, সবাইকে দানখয়রাত করে যাচ্ছেন। আমি এসব দেখাশোনা করে থাকি। এর বেশি কিছু জানি না।’

কোনোভাবেই জমিস উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ না করতে পেরে ইয়াসিন আলীকে অনুরোধ করা হয়। তাঁর মাধ্যমে জসিমের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। প্রথমে তিনি আশ্বাস দিলেও পরে নাকচ করেন।

রাউজানের বাসিন্দারা জানান, চার ভাইয়ের মধ্যে তৃতীয় জসিম উদ্দিন। তাঁর বড় ভাই মো. রফিক ১৯৯০ সালে সংযুক্ত আর আমিরাতে পাড়ি জমান। শারজাহ থেকে গাড়ির পুরোনো মালামাল দেশে এনে বিক্রি শুরু করেন। পরে জসিম উদ্দিন এই ব্যবসায় যুক্ত হন। ২০০৩ সালে তেলের পাম্প দিয়ে দেশে ব্যবসা শুরু করেন। রাউজানের তেলের পাম্পের নাম দেন ইউনুছ ফিলিং স্টেশন। এরপর কাপ্তাই সড়ক ও রাঙ্গুনিয়াতেও পাম্প করেন তিনি। এ ছাড়া চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদে গাউছিয়া মার্কেটে ইউনুছ ট্রেডার্স নামে দোকান রয়েছে। যেখানে গাড়ির মালামাল বিক্রি করা হয়। দোকানটি জসিমের ভাই আবু তাহের দেখভাল করতেন। এখন দেখভাল করেন আরেক ভাই মোক্তার হোসেন। ওই দোকানে কয়েক দফা গেলেও তাঁদের কাউকে পাওয়া যায়নি।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, এমন একজন ব্যক্তির বিদেশে এত সম্পদ বৈধ আয়ে হয়েছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহের কারণ আছে। হতে পারে ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, এমন কেউ তাঁকে সামনে রেখেছেন। হুন্ডির মাধ্যমে এই অর্থ পাচার হতে পারে। স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমেও অর্থ বাইরে নেওয়া হতে পারে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো চাইলে এসব অর্থের উৎস খতিয়ে দেখতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট সেই দেশের সংশ্লিষ্ট সংস্থার সহযোগিতা নিয়ে এটা বের করতে পারে।

[print_link]